মালিকানা

বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের মালিকানা হস্তান্তর প্রক্রিয়া

আজকের আলোচনা বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের মালিকানা হস্তান্তরে প্রক্রিয়া ও নিয়ামবলি


মালিকানা

বাংলাদেশে বাইক বা মোটরসাইকেলের মালিকানা হস্তান্তরের জন্য একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া এবং নিয়ামাবলী রয়েছে, যা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (BRTA) দ্বারা পরিচালিত হয়। মালিকানা হস্তান্তরের নিয়মগুলো সাধারণত নিম্নরূপ:


১. মালিকানা হস্তান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:

  • মূল রেজিস্ট্রেশন সনদপত্র (Bluebook)।
  • সেল লেটার বা দলিল: পুরোনো মালিক থেকে নতুন মালিকের কাছে বাইক বিক্রির দলিল।
  • ট্যাক্স টোকেন এবং ফিটনেস সনদ: ট্যাক্স ও ফিটনেস সার্টিফিকেট আপডেট করা থাকতে হবে।
  • ইন্স্যুরেন্স কাগজপত্র: বাইকটির ইনস্যুরেন্স সংক্রান্ত নথিপত্র।
  • জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি: পুরোনো এবং নতুন দুই মালিকের।
  • পাসপোর্ট সাইজ ছবি: নতুন মালিকের ২-৩ কপি।
  • আয়কর শনাক্তকরণ নম্বর (TIN) সার্টিফিকেট: নতুন মালিকের।
  • চালানের কপি: মোটরসাইকেলের মালিকানা হস্তান্তরের জন্য BRTA-তে জমা করা ফি-এর রসিদ।

২. মালিকানা হস্তান্তরের ধাপসমূহ:

  1. পুরাতন মালিকের অনুমতি: প্রথমে পুরাতন মালিক থেকে বাইক বিক্রির সেল লেটার গ্রহণ করতে হবে, যা একটি লিখিত দলিল আকারে থাকবে।
  2. BRTA অফিসে আবেদন: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে BRTA-এর সংশ্লিষ্ট অফিসে আবেদন করতে হবে।
  3. ফি প্রদান: বাইক মালিকানা হস্তান্তরের জন্য নির্ধারিত সরকারি ফি পরিশোধ করতে হবে। সাধারণত, এটি বাইকের বয়স এবং ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়।
  4. ডকুমেন্ট যাচাই: BRTA-এর কর্মকর্তারা সকল কাগজপত্র যাচাই করবেন। সবকিছু সঠিক থাকলে নতুন মালিকের নামে বাইকটি রেজিস্টার করা হবে।
  5. নতুন রেজিস্ট্রেশন সনদ: প্রক্রিয়া শেষ হলে নতুন মালিকের নামে রেজিস্ট্রেশন সনদ (Bluebook) ইস্যু করা হবে।

৩. সময়সীমা:

  • মালিকানা হস্তান্তরের আবেদন জমা দেওয়ার পর সাধারণত ৭-১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

৪. কিছু প্রয়োজনীয় পরামর্শ:

  • দলিল ও অন্যান্য কাগজপত্রে ভুল না থাকলে পুরো প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হবে।
  • সবসময় BRTA-এর অফিসিয়াল নিয়মাবলী অনুসরণ করুন এবং ফি সংক্রান্ত সঠিক তথ্য BRTA-এর অফিস থেকে সংগ্রহ করুন।

এই নিয়মাবলী অনুসরণ করে আপনি বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের মালিকানা হস্তান্তর করতে পারেন।


Online এ করার উপাই ২০২৪ সাল

১. দালাল ছাড়াই কাজটা a-z করানো যাবে ইন শা আল্লাহ ।

২. নাম ট্রান্সফার ফী ৩৮০০ টাকা জমা দিয়ে সব পেপার্স রেডি করে bsp ওয়েবসাইটে https://bsp.brta.gov.bd সব পেপার্স এর স্ক্যান্ড কপি আপলোড করে এপোয়েনমেন্ট নিবেন।

৩. এপোয়েনমেন্ট ডেট পেলে বাইক, সব কাগজ, ক্রেতা বিক্রেতা চলে যাবেন BRTA বাইক ইন্সপেকশন করে সব সাইন করে দিলে সব ফাইলটা একটা রুমে জমা দিলে একনোলেজমেন্ট পেয়ে যাবেন। এরপর ফীংগার প্রিন্ট আর ছবি তোলার প্রসেস শুরু হবে।

ডকুমেন্টস নিডেড:

১. ৩৮০০ টাকা ব্যাংক জমা।

২. ট্যাক্স টোকেন এর ২ কপি

৩. মেইন ব্লুবুক এক কপি

৪. ক্রেতার ২ কপি ছবি ড্রাইভিং লাইসেন্স ও nid কপি

৫. বিক্রেতার ২ কপি ছবি ও nid কপি

৬. ক্রয় ও বিক্রয় ফর্ম + ৬০০ টাকার স্ট্যাম্প ও সব নোটারি করানো।


১. ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা:

  • বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক।
  • লাইসেন্স ছাড়া মোটরবাইক চালানো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

২. হেলমেট পরিধান:

  • মোটরবাইক চালানোর সময় চালক এবং পেছনের যাত্রী হেলমেট পরা বাধ্যতামূলক।
  • মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার করতে হবে, যা সড়ক দুর্ঘটনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

৩. গতির সীমা:

  • মোটরবাইকের গতি নির্ধারিত সীমার মধ্যে রাখতে হবে।
  • শহরের অভ্যন্তরে সাধারণত ৩০-৪০ কিমি/ঘণ্টা, আর মহাসড়কে ৬০-৭০ কিমি/ঘণ্টা এর মধ্যে চালাতে হয়।

৪. ট্রাফিক সাইন এবং সিগন্যাল মেনে চলা:

  • ট্রাফিক সাইন ও সিগন্যাল মেনে চলতে হবে।
  • লাল আলোতে থামতে হবে, এবং সবুজ আলো হলে চালানো যাবে।
  • জেব্রা ক্রসিং বা পায়ে চলার পথ দিয়ে হাঁটা মানুষের জন্য বাইক থামাতে হবে।

৫. ওভারটেকিং নিষেধাজ্ঞা:

  • ওভারটেক করতে হলে ট্রাফিক আইন মেনে সঠিক সময় এবং জায়গায় করতে হবে।
  • সংকীর্ণ রাস্তায় বা ট্রাফিক সিগন্যালের কাছাকাছি ওভারটেক করা নিষেধ।

৬. সঠিক লেন ব্যবহারের নিয়ম:

  • সড়কে চলার সময় নির্ধারিত লেন ব্যবহার করতে হবে।
  • বাম দিকের লেন দিয়ে চালানো উচিত, এবং ডান লেন ওভারটেক করার জন্য ব্যবহার করতে হয়।

৭. মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ:

  • চালনার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
  • ফোনে কথা বলতে হলে বাইক থামিয়ে কথা বলা উচিত।

৮. ইন্ডিকেটর ব্যবহার:

  • মোড় নেওয়ার আগে বাইকের ইন্ডিকেটর ব্যবহার করতে হবে।
  • বাঁ বা ডানে মোড় নেওয়ার জন্য সঠিক ইন্ডিকেটর দেওয়া উচিত।

৯. দ্বিতীয় আরোহী (পিলিয়ন):

  • মোটরবাইকে চালকের সাথে একাধিক ব্যক্তি বসানো নিষিদ্ধ।
  • মোটরবাইকের পেছনের সিটে শুধুমাত্র একজন পিলিয়ন বা যাত্রী বসতে পারবেন।

১০. ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশন সনদ:

  • বাইকের ফিটনেস সার্টিফিকেট এবং রেজিস্ট্রেশন বৈধ থাকতে হবে।
  • নিয়মিত বাইকের রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করতে হবে এবং ফিটনেস পরীক্ষা করতে হবে।

১১. সড়কের গতি রোধক এবং স্পিড ব্রেকার:

  • স্পিড ব্রেকার বা অন্যান্য গতি রোধক স্থানে ধীরগতিতে চালাতে হবে।
  • এই জায়গাগুলোতে সাধারণত ২০ কিমি/ঘণ্টা গতি সীমা রাখা উচিত।

১২. হর্ন ব্যবহারের নিয়ম:

  • অতিরিক্ত হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ।
  • হর্ন কেবল প্রয়োজনীয় জায়গায় এবং সীমিত পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে।

১৩. সুরক্ষামূলক পোশাক:

  • চালকের নিরাপত্তার জন্য হেলমেট ছাড়াও সুরক্ষামূলক পোশাক পরিধান করা যেতে পারে, যেমন: গ্লাভস, বুট, এবং জ্যাকেট।

১৪. মদ্যপান ও নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ড্রাইভিং:

  • মদ্যপান বা অন্য কোনো মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে মোটরবাইক চালানো নিষিদ্ধ।

১৫. গাড়ির কাগজপত্র বহন করা:

  • চালকের সঙ্গে সব সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন ড্রাইভিং লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ইনস্যুরেন্স পলিসি ইত্যাদি থাকতে হবে।

এগুলোই বাংলাদেশের সড়কে মোটরবাইক চালানোর প্রধান নিয়মাবলী। এই নিয়মগুলি মেনে চললে দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেক কমে যায় এবং সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।

Bike related আর পোস্ট/ টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ঘুরে দেখুন । Click Here

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *