ড্রাইভিং

মোটরবাইক ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়মাবলী

আজকের আলোচনা মোটরবাইক ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়মাবলী নিয়ে ।


ড্রাইভিং

বাংলাদেশে মোটরবাইক ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য বেশ কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম এবং ধাপ অনুসরণ করতে হয়। নিচে এই প্রক্রিয়া ও নিয়মাবলী তুলে ধরা হলো:


১. বয়স সীমা:

  • মোটরবাইক ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারীর বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে।

২. শিক্ষাগত যোগ্যতা:

  • আবেদনকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণী পাস হতে হবে।

৩. প্রাথমিক আবেদন:

  • লার্নার (শিক্ষানবিস) লাইসেন্স পেতে প্রথমে আবেদন করতে হয়।
  • বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (BRTA) ওয়েবসাইট থেকে বা সরাসরি অফিস থেকে আবেদন ফর্ম পাওয়া যায়।
  • আবেদন ফর্ম পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ জমা দিতে হবে।

৪. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:

  • জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র
  • ছবি (সাধারণত পাসপোর্ট সাইজ)।
  • রক্তের গ্রুপের সনদ

৫. লার্নার লাইসেন্স:

  • প্রাথমিক আবেদন জমা দেয়ার পরে আপনি লার্নার লাইসেন্স পাবেন, যা দিয়ে ৩ থেকে ৬ মাসের জন্য চালনা করতে পারবেন।
  • লার্নার লাইসেন্স পাওয়ার পর মোটরবাইক চালানোর সময় একটি অনুমোদিত চালককে সাথে রাখতে হবে।

৬. লাইসেন্স পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি:

  • লার্নার লাইসেন্স পাওয়ার পর, মোটরবাইক চালনার বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে।
  • নির্ধারিত সময় পর, আপনার ড্রাইভিং টেস্টে অংশগ্রহণ করতে হবে।

৭. ড্রাইভিং টেস্ট:

  • ড্রাইভিং টেস্টে দুটি অংশ থাকে: লিখিত পরীক্ষা এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা
    • লিখিত পরীক্ষা: ট্রাফিক সাইন, নিয়ম-কানুন এবং সড়ক নিরাপত্তা সম্পর্কে জ্ঞান যাচাই করা হয়।
    • ব্যবহারিক পরীক্ষা: মোটরবাইক চালানোর দক্ষতা এবং ট্রাফিক আইন মেনে চলার ক্ষমতা পরীক্ষা করা হয়।

৮. লাইসেন্স ফি:

  • লাইসেন্স পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত ফি দিতে হবে। এই ফি BRTA’র অফিসে বা তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জমা দেয়া যায়।

৯. চূড়ান্ত ড্রাইভিং লাইসেন্স:

  • পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে, আপনি স্থায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন।
  • লাইসেন্সের মেয়াদ সাধারণত ১০ বছর পর্যন্ত থাকে, এবং মেয়াদ শেষে তা নবায়ন করতে হয়।

১০. BRTA অফিস:

  • বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (BRTA) আঞ্চলিক অফিসে গিয়ে লাইসেন্স সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা যায়।
  • BRTA’র ওয়েবসাইট থেকেও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়।

১১. অতিরিক্ত নিয়মাবলি:

  • মোটরবাইক লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
  • লাইসেন্স করার সময় সড়ক নিরাপত্তার নিয়ম-কানুন মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

এই প্রক্রিয়াগুলি সফলভাবে অনুসরণ করলে বাংলাদেশে মোটরবাইক চালনার জন্য বৈধ লাইসেন্স অর্জন করা সম্ভব।

এসব নিয়মাবলী সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রণীত হয়েছে। নিচে মোটরবাইক ড্রাইভিংয়ের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম তুলে ধরা হলো:

১. ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা:

  • বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক।
  • লাইসেন্স ছাড়া মোটরবাইক চালানো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

২. হেলমেট পরিধান:

  • মোটরবাইক চালানোর সময় চালক এবং পেছনের যাত্রী হেলমেট পরা বাধ্যতামূলক।
  • মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার করতে হবে, যা সড়ক দুর্ঘটনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

৩. গতির সীমা:

  • মোটরবাইকের গতি নির্ধারিত সীমার মধ্যে রাখতে হবে।
  • শহরের অভ্যন্তরে সাধারণত ৩০-৪০ কিমি/ঘণ্টা, আর মহাসড়কে ৬০-৭০ কিমি/ঘণ্টা এর মধ্যে চালাতে হয়।

৪. ট্রাফিক সাইন এবং সিগন্যাল মেনে চলা:

  • ট্রাফিক সাইন ও সিগন্যাল মেনে চলতে হবে।
  • লাল আলোতে থামতে হবে, এবং সবুজ আলো হলে চালানো যাবে।
  • জেব্রা ক্রসিং বা পায়ে চলার পথ দিয়ে হাঁটা মানুষের জন্য বাইক থামাতে হবে।

৫. ওভারটেকিং নিষেধাজ্ঞা:

  • ওভারটেক করতে হলে ট্রাফিক আইন মেনে সঠিক সময় এবং জায়গায় করতে হবে।
  • সংকীর্ণ রাস্তায় বা ট্রাফিক সিগন্যালের কাছাকাছি ওভারটেক করা নিষেধ।

৬. সঠিক লেন ব্যবহারের নিয়ম:

  • সড়কে চলার সময় নির্ধারিত লেন ব্যবহার করতে হবে।
  • বাম দিকের লেন দিয়ে চালানো উচিত, এবং ডান লেন ওভারটেক করার জন্য ব্যবহার করতে হয়।

৭. মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ:

  • চালনার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
  • ফোনে কথা বলতে হলে বাইক থামিয়ে কথা বলা উচিত।

৮. ইন্ডিকেটর ব্যবহার:

  • মোড় নেওয়ার আগে বাইকের ইন্ডিকেটর ব্যবহার করতে হবে।
  • বাঁ বা ডানে মোড় নেওয়ার জন্য সঠিক ইন্ডিকেটর দেওয়া উচিত।

৯. দ্বিতীয় আরোহী (পিলিয়ন):

  • মোটরবাইকে চালকের সাথে একাধিক ব্যক্তি বসানো নিষিদ্ধ।
  • মোটরবাইকের পেছনের সিটে শুধুমাত্র একজন পিলিয়ন বা যাত্রী বসতে পারবেন।

১০. ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশন সনদ:

  • বাইকের ফিটনেস সার্টিফিকেট এবং রেজিস্ট্রেশন বৈধ থাকতে হবে।
  • নিয়মিত বাইকের রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করতে হবে এবং ফিটনেস পরীক্ষা করতে হবে।

১১. সড়কের গতি রোধক এবং স্পিড ব্রেকার:

  • স্পিড ব্রেকার বা অন্যান্য গতি রোধক স্থানে ধীরগতিতে চালাতে হবে।
  • এই জায়গাগুলোতে সাধারণত ২০ কিমি/ঘণ্টা গতি সীমা রাখা উচিত।

১২. হর্ন ব্যবহারের নিয়ম:

  • অতিরিক্ত হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ।
  • হর্ন কেবল প্রয়োজনীয় জায়গায় এবং সীমিত পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে।

১৩. সুরক্ষামূলক পোশাক:

  • চালকের নিরাপত্তার জন্য হেলমেট ছাড়াও সুরক্ষামূলক পোশাক পরিধান করা যেতে পারে, যেমন: গ্লাভস, বুট, এবং জ্যাকেট।

১৪. মদ্যপান ও নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ড্রাইভিং:

  • মদ্যপান বা অন্য কোনো মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে মোটরবাইক চালানো নিষিদ্ধ।

১৫. গাড়ির কাগজপত্র বহন করা:

  • চালকের সঙ্গে সব সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন ড্রাইভিং লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ইনস্যুরেন্স পলিসি ইত্যাদি থাকতে হবে।

এগুলোই বাংলাদেশের সড়কে মোটরবাইক চালানোর প্রধান নিয়মাবলী। এই নিয়মগুলি মেনে চললে দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেক কমে যায় এবং সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।

Bike related আর পোস্ট/ টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ঘুরে দেখুন । Click Here

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *